ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ৬টি সংসদীয় আসনের মাঝে ২০১৮ সালের ৩০ই ডিসেম্বরের বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচনে ৫টি আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব দিচ্ছে আর মাত্র ১টি আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল নেতৃত্ব দিচ্ছে।
বদরুদ্দোজা মো: ফরহাদ হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা অর্থাৎ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসন থেকে ২০১৮ সালের ১৩ই মার্চের উপ-নির্বাচনে ৮১,৩৮৬ ভোট পেয়ে সর্বপ্রথম সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিল। এরপর তিনি ২০১৮ সালের বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচনে পুনরায় জয়ী হোন।
উকিল আবদুস সাত্তার ভূঞা একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ। তিনি মোট ৫ বার সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন এবং তিনি সাবেক মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি সাংগঠনিকভাবে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার একান্ত উপদেষ্টা ছিলেন। সর্বপ্রথম তিনি ১৯৭৯ সালে কুমিল্লা-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন, এরপর ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ সালের নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে ব্যাপক সফলতার সাথে জয়ী হোন। ২০০৮ সালের পর তিনি রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে নিষ্ক্রিয় ছিলেন, এরপর ২০১৮ সালের বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচনে ৮৩ হাজার ৯৯৪ ভোট পেয়ে আবারো সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হোন।
র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী রাজনীতিবিদ। তিনি ২০১১ সালের উপ-নির্বাচনের মাধ্যমে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হোন। এরপর এখন পর্যন্ত জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি নবম জাতীয় সংসদে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, দশম সংসদে পার্বত্যচট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে মনোনীত হোন। বর্তমানে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
আনিসুল হক একজন আইনজীবি ও আওয়ামী রাজনীতিবিদ। তিনি প্রথম ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। যদিও সেই নির্বাচনে কোনো প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি সাংসদ নির্বাচিত হোন। তারপর ২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনেও তিনি জয়ী হোন এবং তিনি পরপর দুইবার আইন, বিচার ও সংসদ বিষয় মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। আনিসুল হক বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ও জাতীয় চার নেতা হত্যা মামলার প্রধান কৌঁসুলি ছিলেন এবং তিনি বিডিআর বিদ্রোহ ও দুদকের মামলাসহ রাষ্ট্রীয় অনেকগুলা মামলা পরিচালনা করছেন।
মোঃ এবাদুল করিম বুলবুল একজন শিল্পপতি ও আওয়ামী রাজনীতিবিদ এবং তিনি ২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি একইসাথে দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস ও বীকন পয়েন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এছাড়াও তিনি ওরিয়ন গ্রুপ এবং কোহিনূর কেমিক্যালস কোম্পানি কর্ণধার। তিনি রাজনীতিবিদ থেকে শিল্পপতি হিসেবেই বহুল পরিচিত।
ক্যাপ্টেন এ. বি. তাজুল ইসলাম একজন মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী রাজনীতিবিদ। তিনি সর্বপ্রথম ১৯৯৬ সালে সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হন। এরপর তিনি আবার ২০০৮ থেকে এখন পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনের সাংসদের দায়িত্বে রয়েছেন। ২০০৯ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বলাবাহুল্য, ২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে তিনি ২ লাখ ৭৮ ভোট পান আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির আবদুল খালেক পেয়েছেন মাত্র ১৩২৯ ভোট।
উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম একজন উদ্যোক্তা ও আওয়ামী রাজনীতিবিদ। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি এ কে এম ইকবাল আজাদের সহধর্মিনী, তাই তিনি শিউলি আজাদ নামেই বেশি পরিচিত। শিউলি আজাদ ২০১৪ সালের দশম জাতীয় নির্বাচনেও আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছিলেন কিন্তু মহাজোটের স্বার্থে তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন।
রুমিন ফারহানা একজন আইনজীবী ও জাতীয়তাবাদী রাজনীতিবিদ। তিনি ২০১৯ সালে সংরক্ষিত নারী আসন-৫০ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ইংল্যান্ড ও আমেরিকা থেকে ব্যারিস্টারি পড়াশোনা শেষে দেশে আসেন এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উচ্চ আদালত বিভাগের আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন। রুমিন ফারহানা বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং তিনি ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্যও। তার পিতা অলি আহাদ ভাষাসৈনিক, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, ও স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী। তার পিতাকে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের ১৫৪ ধারা ভঙ্গের নায়ক বলা হয়। একইসাথে তিনি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার শত শত বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, অবদান ও কৃতিত্ব সবার মাঝে তুলে ধরাই 'ব্রাহ্মণবাড়িয়া ট্রিবিউন' এর মূল উদ্দেশ্য। যোগাযোগ: sazib.online@gmail.com
প্রতিষ্ঠাতা: মোহাম্মদ সজীবুর রহমান সজীব
© Brahmanbaria Tribune | All Rights Reserved 2019-Present